বিচিত্র কবিতা একটি সুন্দর কবিতার বই l এই বইয়ে ভিন্নধর্মী কবিতা স্থান পেয়েছে lকবিতা মানুষের মনের দর্পন l কবিতা মানুষের মনের কথা বলে l মানুষ এই জগৎ সংসারে জীবন যুদ্ধেরত l কবিতা মানুষকে অনুপ্রেরণা যোগায় l জীবন মুখী কবিতা মানুষ কে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে l এই বই এর সমস্ত কবিতা সুন্দর জীবন মুখী কবিতা l
কবিতা গুলি পাঠকের মনকে সমৃদ্ধ করবে এবং জীবন এর পথ চলতে অনুপ্রেরণা যোগাবে l কবিতা পথে পাঠক আনন্দ লাভ করবেন l এই বইয়ের কবিতা গুলির অর্থ পাঠক কে নুতুন করে জীবন উপলব্ধি করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে l
বিখ্যাত ও অভিজ্ঞ কবিদের কবিতার সংকলন হলো বিচিত্র কবিতা l
বিচিত্র কবিতা বইটি পাঠকের হাতে তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত l
সমস্ত কবিকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা l
আশাকরি বিচিত্র কবিতা বইটি পাঠকের মন জয় করতে পারবে l
শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা সহ
ইউনুস মোল্লা
বিচ্যুতি ও অবগাহন
সোমশুভ্র (অর্ক শান্ডিল্য)
অর্ধ-গঠিত শব্দগুলি পৃষ্ঠতলের দিকে এবং জমিতে চলার চেষ্টা করেছিল।
মৃদু শব্দ, ফিসফিস রান্নাঘর থেকে; স্ফীত, ছটফটে এক মহিলা,
এবং আমার পিতামাতার ঘরে নিদ্রাহীন মুহুর্তে একবারের জন্য
আমি ভাবলাম আমার শিক্ষক শ্রীমতি দাস,
আমাদের বাড়িতে কিছু সম্পর্ক পিছলে ছিল আমাদের বহু সংশোধন প্রয়োজন।
আমি আমার পরিবারের কথা বলার পরে বলি; আসল কারন সূর্যের কান্না।
দুঃখ। তবে সেটি ছিল কোনো এক গ্রীষ্ম— কোনও পাঠ নেই,
কোনও মহড়া নেই, হুশ নেই,
রহস্যময় আলোচনায় গভীরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের নিমজ্জিত সময়।
আমি প্রসারিত, বিষন্নতা আগলে লুকিয়ে থাকা
এবং লুকিয়ে রাখা কণ্ঠগুলি শুনতে শুনতে
গ্রীষ্মের শব্দে ঘাসে তলিয়ে যাওয়া হিমানি কনাগুলো,
––––––––
যারা এতক্ষণ চিৎকার করে আগুন'কে আবাহন করেছে;
জ্বলছে, কয়েকটি বিপথগামী , ছিনতাই হওয়া আমার অনূভুতি,
মিছরি দানার মোড়কের মত দুমড়ে যাওয়া বর্তমান।
শ্রীমতি দাস সবসময় খুব চেষ্টা করছেন।
আমাদের সম্পর্ককে সুস্থতা দিতে, সে দাবি করেছিল
যে আমার ভাইবোন যারা ছিল ইতিমধ্যে আমার ভিতরে
পরিবর্তন লক্ষণগুলো প্রত্যক্ষ করেছে, অপেক্ষা করছি।
দাঁত কাটা এবং আঘাত ও নির্দেশ।
তবে গোপনীয়তা হিসাবে আমার জানালার বিপরীতে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে আমার মানসিকতা দরজার নীচে
আমার মাথা ভারী অনুভূত হয়েছিল
এবং আমি আমার জিহ্বা কোথায় রাখা ভুলে গেছি।
অর্থাৎ আমি এখন সুস্থতার পথে।
প্রেম ও পরকলা
সোমশুভ্র (অর্ক শান্ডিল্য)
আমি প্রেম-পরকলা সম্পর্ক সম্পর্কে ভাবছিলাম।
এটি খুব গুরুত্ববহ।
একে অপরের পরকলা'র উপর ভিত্তি করে প্রেমের সম্পর্ক।
প্রেম-পরকলা সম্পর্কের সমস্যাটি এক্ষেত্রে অতিমাত্রায়।
অগত্যা, আপনি অন্য ব্যক্তিকে পরকলা ছাড়া সঠিকভাবে চেনেন না।
এছাড়াও অন্য ব্যক্তি তার উপর খুব নির্ভরশীল কিনা সেটা জানতেও পছন্দসই পরকলা প্রয়োজন হয়।
আমরা সবাই পরকলা মানে পরকীয়া অথবা প্রতারণা কিংবা আস্তরন উপভোগ করি,
তবে তা পুরো সম্পর্ক তৈরির জন্য কিছু নয়।
তরুণদের কাছে আমার পরামর্শ হ'ল পরকলা পছন্দ করো তবে তাকে সম্পর্কের সাথে এক করা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।
একে অপরের সাথে সদৃশ সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করুন।
অন্তহীন বা ততক্ষণ অব্দি অপেক্ষমান থাকুন;
যতোদিন না আপনি অধিকার লাভ করছেন,
পরকলা বিহীন প্রেমের হাটুরে পথের সন্ধান পেতে।
আপনি আকর্ষণীয় কিছু পেতে পারেন কিনা দেখুন পরকলা'র হাট থেকে, যদি আপনার পছন্দ হয় তার ব্যক্তিত্ব।
তখন পরকলা বা আস্তরন কিংবা এতোদিনের অতীত খুলে হাত ধরুন।
কারন, বসন্তের আয়ু বড়ো কম।
যা করার দ্রুত এবং সুনির্দিষ্ট পরিণতি দিন। আজকাল; প্রেম ও পরকলা দুটোই বিলুপ্তির পথে, রয়ে গেছে শুধু ধূসর তেলচিটে বিছানা।
––––––––
সিসিফাস
সোমশুভ্র (অর্ক শান্ডিল্য)
পরমাণু কনা আপনি।
অক্ষরেখা তুমি।
আর; আমার পঞ্চভূতে নশ্বর দেহটি,
এক চমকপ্রদ জরুরী বালিকা জলে ঝাঁকুনি দিয়ে শুদ্ধি লাভ করে।
তবে, আমি বরফের শীতলতা চাই।
আমি এমন দু'হাত চাই
যা আমার সাথে পরিষ্কার কথা বলুক,
গাণিতিক সূত্র কি পুনরায় শাসন করে মনন ও চিন্তন?
এবং তার উত্তরাধিকারীদের আমি স্পর্শ করতে পারি না।
আশ্চর্য আমার পরিবারের কোনও ছবি নেই।
একসময় আমি সাধারণ ছিলাম।
আমি দু'হাত দিয়ে, পায়ে, একটি স্যাঁতসেঁতে স্মরণে আমার সাধারণত্ব ভালো ভাবে উপভোগ করেছি।
তারপরে, একটু ঘুম, একটু ঘুম,
হাত ভাঁজ করে একটু বিশ্রাম নিতে হবে।
আমি নিজেকে জিজ্ঞাসা করলাম,
আপনি কি শুধু এটি পছন্দ করেন না?
এবং তারপরে, আপনি কেবল এটি পছন্দ করেন না কেন?
তাহলে আমি কোন অনু-গ্রহ থেকে এসেছি?
আমি কি তার নিঃশব্দ সিসিফাস?
পর্বতপৃষ্ঠ হতে ক্রমাগত ওঠানামা করা,
এখন দ্রবীভূত ঐতিহাসিকভাবে সৎ যুদ্ধের চিৎকার
এবং ইতিহাসের পৃষ্ঠাগুলিতে যা মানুষের মতো শ্বাস নেয়?
এখানে বিপত্তি রয়েছে, আগের চেয়ে অনেক বেশি অসহিষ্ণুতা
এবং শ্বেত সন্ত্রাস দাগ কেটেছে ঝলমলে উজ্জ্বল মানব চেতনায়,
অনেকটা বরফের জালের উপরে শোকের পর্দার মতো।
যারা সেই পর্দার পিছনে ধর্মীয় উন্মাদপ্রায়;
তাদের মত হলো, আমি কেবল মরতে চেয়েছিলাম,
চাঁদ-অন্ধকার, ধন্য, আমার কষ্টের সবচেয়ে আপন নদীতটের নীচে রচিত,
আগুনের ঝাঁক দূরে, গান গাইছে,
আর, আমি আমার শৈশবের ঈশ্বরের মুখোমুখি।
সবচেয়ে সহজতম দুঃখ
সোমশুভ্র (অর্ক শান্ডিল্য)
––––––––
সবচেয়ে সহজতম দুঃখ
একটি ছেলে
অন্যরকম ছেলেটা, আমি তাকে দেখেছি
একটি নগ্নপদ মেয়ের সঙ্গে চলা,
পরিষ্কার মসৃণ গোড়ালি ,
যে ধরনের নাক দেয় নাকছাবি কে প্রশ্রয়,
যারা স্বপ্ন দেখে তাদের মত চোখ
ফিরে আসার স্বপ্ন৷
এ ছেলে ভাগ্যবান, অন্য ছেলেটি দেখছে
একটু ব্যথা পায়
আসলে, বলা যায়
এটি একটি ছোট মোটর গাড়ি৷
স্বভাবতই;
আমার মধ্যে একটি পশু আছে,
এবং, যে পশু মধ্যে
একটি ক্ষুধা আছে৷
আমি ছেলেটিকে মনে রেখেছি
ওটা আমি ছিলাম
দেখছি, আমি একটু একটু করে
ছেলেটার হাঁটা৷
আমি ও আমাদের উভয় ছিল
এটা কিভাবে অনুভূত হয়।
আমি ঠিক করতে পারি না,
কে যে আমি? কি ছিলাম তখন?
ভিতরে, একটি ব্যাথা
আমি দাঁড়িয়ে হিসাব কষছি
অনেক জায়গা
শূন্য প্রায় অঙ্কের খাতা৷
সেই মেয়েটি, মানে গোলাপী মোটর গাড়ি
একদিন গোলাপে গোলাপে ভরে গেলো
ছেলেটা দেখছে তখনও
চলে গেলো, চশমার কাচ ঝাপসা।
সবচেয়ে সহজতম দুঃখ
সবচেয়ে সহজতম দুঃখ
একটি ছেলে
অন্যরকম ছেলেটা, আমি তাকে দেখেছি
একটি নগ্নপদ মেয়ের সঙ্গে চলা,
পরিষ্কার মসৃণ গোড়ালি ,
যে ধরনের নাক দেয় নাকছাবি কে প্রশ্রয়,
যারা স্বপ্ন দেখে তাদের মত চোখ
ফিরে আসার স্বপ্ন৷
এ ছেলে ভাগ্যবান, অন্য ছেলেটি দেখছে
একটু ব্যথা পায়
আসলে, বলা যায়
এটি একটি ছোট মোটর গাড়ি৷
––––––––
স্বভাবতই;
আমার মধ্যে একটি পশু আছে,
এবং, যে পশু মধ্যে
একটি ক্ষুধা আছে৷
আমি ছেলেটিকে মনে রেখেছি
ওটা আমি ছিলাম
দেখছি, আমি একটু একটু করে
ছেলেটার হাঁটা৷
আমি ও আমাদের উভয় ছিল
এটা কিভাবে অনুভূত হয়।
আমি ঠিক করতে পারি না,
কে যে আমি? কি ছিলাম তখন?
ভিতরে, একটি ব্যাথা
আমি দাঁড়িয়ে হিসাব কষছি
অনেক জায়গা
শূন্য প্রায় অঙ্কের খাতা৷
সেই মেয়েটি, মানে গোলাপী মোটর গাড়ি
একদিন গোলাপে গোলাপে ভরে গেলো
ছেলেটা দেখছে তখনও
চলে গেলো, চশমার কাচ ঝাপসা।
সহসা অকালমৃত্যুর সমিধ হতে
ধোঁয়া লাগে চোখে;
জঙ ধরা হৃদয়ে,
এখনো তারা'রা কাঁপে৷
রফা
শঙ্কর নাথ চক্রবর্তী
একটা গোলাপ দেবো
ভেবেছিলাম তোকে,
প্রকৃতি থেকে
প্রকৃত আর কি
চাওয়ার আছে !
অনেকেই চায়,
কজন গোলাপে কাঁটায়
স্থির ঝড় পায় !
ঝড় কি গোলাপী হয় প্রেমে
প্রেম কি গোলাপী হয় ঝড়ে,
নাকি রফা হয়ে যায় পরস্পরে !
চাওয়া
শঙ্কর নাথ চক্রবর্তী
ভালোবাসা নয়
তুমি পাহাড় চেয়েছিলে,
আমি শুধু পাথর
আর উচ্চতা চিনি !
ভালোবাসা নয়
তুমি সম্পর্ক চেয়েছিলে,
আমি শুধু ভাষা
আর অন্তর্দৃষ্টি বুঝি !
ভালোবাসা নয়
তুমি যোগসূত্র চেয়েছিলে,
আমি শুধু আমাকে
তোমার চোখে চেয়েছিলাম !
––––––––
উৎসব
অরূপানন্দ আচার্য
বেঁচে থাকটাই আজ উৎসব।
রাত্রে শান্তির ঘুমোনোর পর,
পরের দিন নতুন সূর্য দেখবো কিনা!
নিঃশ্বাসে বিশ্বাস নেই।
আজ যেন, বেঁচে থাকটাই উৎসব।
শঙ্কায় দিন কাটে,
মানুষের সঙ্গে মন খুলে কথা বললে,
মনে হয়, এই বুঝি করোনা আক্রান্ত হবো।
প্রতিদিন অতিবাহিত হয়,
মনে হয় যেন, এক আলোকবর্ষ অতিক্রম করছি।
প্রতিক্ষন বেঁচে থাকটা,
যেন উৎসব।
যতক্ষন আচ্ছে প্রাণ,
প্রানপনে সরাব করোনা নামক জঞ্চাল।
বাড়ি যেন, পবিত্র হাঁসপাতাল।
আজ যারা রুজি, রোজগারে বেরোছে,
বাঁচার তাগিদে,
মনে থাকে সংশয়,
উদর পূর্তি হবে না।
উদর তো শুনবে না।
এক একটা দিন,
বেঁচে থাকাটা উৎসব।
দূরে সরে গেছে, নানান পূজা পার্বন।
আসল হল জীবন।
জীবনকে জিয়ে রাখটাই,
আসল উৎসব।
আমাকে বাঁচতে হবে,
পরিবারের সদস্যদের মুখে,
তুলে দিতে হবে অন্ন।
তাই বেঁচে থাকটাই, উৎসবে সামিল হওয়া।
নাই বা হল সামাজিক বন্ধন,
বেঁচে থাকটা...
––––––––
––––––––
বেওয়ারিশ লাশ
অরূপানন্দ আচার্য
প্রান বায়ু বেরিয়ে গেছে।
থমকে গেছে অমুল্য জীবন।
নাম, ঠিকানা নেই,
পরিবারের খোঁজ খবর নেই।
তাই আমি বেওয়ারিশ লাশ।
দীর্ঘদিন মর্গে থাকার পর,
পচে, গলে গেছে সারা শরীর।
ডোমরা সাঁড়াশি দিয়ে,
টেনে নিয়ে চলেছে,
পচা, গলা দেহ।
একটা একটা অঙ্গ,প্রতঙ্গ খুলে পড়ছে।
বেওয়ারিশ লাসের প্রতি,
এত অমানবিক আচরণ!
যে ধর্মের বেওয়ারিশ লাশ হোক না কেন,
কোনো ধর্ম অমানবিকতা,
মেনে নেবে না।
কোনা অভিজাত ব্যাক্তি মারা গেলে,
চন্দন কাঠ দিয়ে পোড়ানো হয়।
বেওয়ারিশ লাশের কপালে জোটেনা,
অক্ষত দেহ।
কপালে জোটে হিংস্র, পাশবিক আচরন।
যেন বাঘ গোরুকে,
ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাচ্ছে।
অদ্ভুত অমানবিক সমাজ!
অতন্দ্র প্রহরী
অরূপানন্দ আচার্য
সীমারেখার কাছে,
ঊর্দি পরে,
বন্ধুক কাঁধে নিয়ে,
অবিচল নেত্রে,
আমদের সুরক্ষা দিয়ে যাও।
প্রচণ্ড গরমে, প্রচণ্ড শীতে,
ঝড়-তুফানের মাঝে,
তোমরা যে আমাদের ভরসা।
তোমার যে আমাদের গর্ব।
তোমাদের সাফল্যে,
আমরা উল্লাসিত হই।
তোমরা যে ভারতমাতার বীর সন্তান।
আততীয় সঙ্গে গুলি বর্ষনে,
জীবন ঝুঁকি নিয়ে,
অবিরাম লড়াই চালিয়ে যাও।
কখনও গুলির আঘাতে,
ঝাঁঝরা হয়ে যায় তোমাদের শরীর।
তবুও হাল ছেড়ো না।
কত ভারত মাতার বীর সন্তান
মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে,
বুক ফাটা আর্তনাদের সুর বেজে ওঠে,
অক্ষিকোটর হতে অশ্রু বয়ে যায়,
যেন হারলাম,
আমার রক্তের সম্পর্কের ভাই।
প্রতিকুল পরিস্থীতির মধ্যে দিয়ে,
তোমাদের জীবনের পথ অতিবাহিত করতে হয়।
হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রায়, সিয়াচেন হিমবাহে
অতন্দ্র প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে থাকো।
যেন ভারতমাতার রত্ন।
দেশ সেবা যাদের ব্রত,
মৃত্যুকে যাদের পরোয়া নেই, তারা মা...
––––––––
ধাঁধার জগৎ
অরূপানন্দ আচার্য
গ্রষ্মীের প্রচণ্ড তাপদাহের পর,
বঙ্গে এল নব বর্ষা।
কৃষকের মনে জেগেছে উল্লাস।
মনের আনন্দে নেমে পড়ছে,
চাষের কাজে।
শুকিয়ে যাওয়া সবুজ বনানী,
ফিরে পেয়েছে নতুন প্রান।
ডাকছে ডাহুক -ডাহুকি।
নীরবতা কাটিয়ে,
ঝিঁ ঝিঁ পোকার চিঁ চিঁ শব্দে,
মুখরিত পরিবেশ।
বঙ্গমা-বঙ্গমি আলিঙ্গন খেলায় মত্ত।
––––––––
চলছে কোরনার থাবা।
নববর্ষা নিয়ে এল, ভাইরাল জ্বর।
সঙ্গে নিয়ে এল, ডেঙ্গু জ্বর।
জ্বর এলেই,
মনে আশঙ্কা জাগে,
আমি কি কোরনাতে আক্রান্ত?
নাকি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত?
নাকি ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত?
সবাই যেন ধাঁধার জগতে বাস করছি।
সবার জীবন যেন অনিশ্চিত পথে।
আজ আছি। কাল সকালে ঘুম ভাঙ্গবে কিনা জানি না।
কখন হয়তো যমরাজ,
আমার জন্য টিকিট নিশ্চিত করে ফেলেছেন।
কোন দিকে যাবে মানুষ?
আজ মানুষ বড় নিরুপায়।
জীবন না জীবিকা,
সবই যেন ধাঁধা।
আজ আমরা অনিশ্চিত পথের যাত্রী।
––––––––
নেপোটিজিম/ স্বজনপোষন
অরূপানন্দ আচার্য
ভাই কোথায় নেই নেপোটিজিম?
নেপোটিজিমের খেলায় চলছে সারা বিশ্ব।
বেসরকারী চাকুরী বলুন,
সরকারি চাকরি বলুন,
সিনেমা জগৎ বলুন,
সঙ্গীত জগৎ বলুন,
কোথায় নেই নেপোটিজিম?
নেপোটিজমের যাঁতাকলে,
বিলীন হয়ে যাচ্ছে, অসাধারন প্রতিভা।
একটা একটা কুঁড়ি,
প্রষ্পুটিত হওয়ার আগে,
অকালে ঝরে যাচ্ছে।
যোগ্যতা নামে শব্দটি,
ধীরে ধীরে বিলীন হচ্ছে।
রাজনীতিতেও চলছে নেপোটিজিম,
পরিবার তন্ত্র থাবা বসাচ্ছে রাজনীতিতে।
ফুলে ফেঁপে উঠছে, রাজনীতিবিদদের পকেট।
কি বলব ভাই?
এই নেপোটিজিমের ষড়যন্ত্রে,
ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়েছিল,
ভারতমাতা।
ভারতমাতা চ্ছিন্ন ভিন্ন করছে,
বিচ্ছিন্নতা বাদী দল।
আমাগো ভাষা
- অগ্নিমিত্র ( ডঃ সায়ন ভট্টাচার্য)
আমার ভাষা, প্রাণের ভাষা, কইতাসিল সবাই,
এই ভাষায় মনটা খুইল্যা কথা কইয়া বেড়াই ..
কথা কইবার লাইগ্যা সবাই মনের মানুষ খোঁজে,
মনের মতো ভাষা পাইলে কথা হক্কলে বোঝে ;
দ্যাহ কত্তা, আমাগো ভাষা বাঁচাইয়া রাখো মনে...
কাউকে না পাইলে কইয়ো আপনারই সনে ।
দ্যাশের মাটির কথা মনে পড়ায় দ্যাশের ভাষা,
পুরায় মনের সকল ইচ্ছা, সকল অভিলাষা ।।
মা
আইভি দেব
ভালো আছোতো মা! ? জানি তুমি সেই
আগের মতই বলবে ... " খুব ভালো" !!
জানো মা ,এই কথা
টা আজ আমিও বলতে
শিখে গেছি । আমি বড় হয়ে গেছি ...!!
যে মেয়েটার পড়তে বসার ভয়ে ঘুম ভাঙতেই
চাইতো না, তোমার বকুনির চোটে কানে বালিশ চেপে শুয়ে থাকতো.......
আজ সংসারে কর্ম ব্যাস্ততায়.... ঘুম আসতেই চায় না ! যে মেয়ে দুপুর হলেই
গল্পের বই বা খেলনা বাটি নিয়ে বসে যেত
আজ দুপুর - বিকেল সবটাই সমান ভাবে কাটেতার !!
যে মেয়েটা তোমার আদর
খাবে বলে ছোট্ট ছোট্ট কারণে অভিমান করতো.... আজও সে বড় অভিমানী ।
কিন্তু, এখন দিন কাটে অভিমান ভাঙানোর
সেই আদরের খোঁজে !!
যে মেয়ে একদিন সারা ঘরে বই, খেলনা, জামাকাপড়ে অগোছালো করে রাখতো,
আজ সে শান্ত হয়ে সংসার গোছানো তে
" লক্ষী বৌয়ের সুনাম পেয়েছে !
মা , যে মেয়েটা তোমার খেতে দিতে দেরি হলে ,
বিছানা করতে দেরি হলে বা এরকম ছোট ছোট কারণে
তোমাকে কতো কথা শোনাতো .. আজ তাকেও ছোট বড় সব
ভুলের জন্য অনেক কথা শুনতে হয় চারপাশের মানুষের কাছে !!
আজ তোমার মেয়েটা তোমার মতো
সংসারের নিয়মেই চলতে শিখে গেছে ।
মা ,খুব ইচ্ছে করে সেই দিন গুলোতে
ফিরে যেতে কিন্তু তা যে আর কোনো ভাবেই সম্ভব নয় ...!!
মা.....অজান্তে তোমাকে আমি যদি কোনো
কষ্ট দিয়ে থাকি ক্ষমা করে দিয়ো !!
মা তুমি ভালো থেকো ,খুব ভালো
আমি ভালো আছি ,খুব ভালো.!!"
বরষা
অগ্নিমিত্র ( ডঃ সায়ন ভট্টাচার্য)
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি ঝরে সারাটা দিন ধরে,
সোঁদা মাটির গন্ধ আসে বাতাসে ভর করে ।..
তালগাছগুলো দোল খেয়ে যেন মহানন্দে ভেজে;
বর্ষা রাণীর স্পর্শ পেয়ে প্রকৃতি ওঠে সেজে!
পাশের মাঠটা পুকুর হলো, কোলা ব্যাঙ যে নাচে...
বৃষ্টির এই ছন্দ মাঝে কবি আনন্দ যাচে ।
আপন মনে সৃষ্টি হলো কত এমন লেখা ..
ছন্দের এই মূর্ছনা যে বৃষ্টির কাছে শেখা!!
পথ যখন বিপন্নে
আইভি দেব
হারাচ্ছি পথ নিঃশব্দে ,
হৃদয় আজ ক্ষত-বিক্ষত।
যে শশী দেখিয়েছিল দিশা,
লেগেছে তার গ্ৰহণ ..—
মিশেযাচ্ছে স্বপ্ন বহুদূরে,
অজানা এক দেশে ...
ক্ষমাও আজ হারিয়েছে ভাষা..
অদৃশ্য শোকে, প্লাবিত দুটি নয়ন
রঙিন নেশায় ডুবতে চায় মন...।
কেউ রাখেনা....
কারুর খবর...!!!
মন থেকে
আইভি দেব
তুমি বলো -অবুঝ..
আমি বলি -বোঝাতে পারিনি,
তুমি বলো - অযথা রাগ..
আমি বলি - সোহাগ না করার অভিমান।
তুমি বলো - মিথ্যে জেদ..
আমি বলি - শুধু স্বপ্ন পূরণ করার ইচ্ছে,
তুমি বলো - ভুল আজ অভ্যেস..
আমি বলি -এটাই ভবিষ্যতের শিক্ষা।
তুমি বলো - অভিযোগ..
আমি বলি -অনুরাগ...,
তুমি বলো - সবটাই নাটক..
আমি বলি - এটাই আমার বাস্তব।
তুমি বলো - খুব চালাক..
আমি বলি - এটাই মনে হয় সরলতা,
তুমি বললে- সব ভুলে যাও..
আমি বলছি - একটু '"বাঁচাতে'" দাও...!
––––––––
––––––––
সে দিনের সেই সোনালী সন্ধ্যা
আইভি দেব
হাজারও মানুষের ভীড়ে
অনেকক্ষন অপেক্ষা করে
দু'জনের দেখা হলো ।
স্বপ্ন সত্যি হবার আনন্দটা
ভাষায় না, এক অপরের চোখেই খুঁজে নিয়েছিল তারা......
তবু ভালোবাসার কথা মুখ ফুটে বলতে না পারলেও ...
কিন্তু তাদের অন্তরের টানে উপলব্ধি করেছিলো
দু'জনে-দু'জনের ভালোবাসাকে.....!
আজও তারা তাদের ভালোবাসাকে
উপলব্ধি করে,নীরবতার মাঝে.......!!
ভাইরাসে প্রেম আসে না
শঙ্কর আলিঙ্গন চক্রবর্তী
মুখের আদল মাস্কে ঢাকা
ইশারাও ঠিক ভাসে না,
তফাৎ তো থাক
শুধু জনে জনে
ভাইরাসে প্রেম আসে না !
নজর টানা শৃঙ্খল মন
বেঁচে থাকলোই ঘেরা আয়োজন
গন্ডি টানা সময় সরণি
সিগন্যালও ঠিক হাসে না !
মেপে সরে থাকা
জন গণ মনে
ভাইরাসে প্রেম আসে না !
হিসাবে আসবে আগামী দিন
থেকে যাওয়া মানে স্বপ্নের ঋণ,
জীবাণুরা ঝেড়ে কাশে না !
চাপে ঢাকা বোধ
জন গণ মনে,
ভাইরাসে প্রেম আসে না !
––––––––
শব্দবোধ
শঙ্কর আলীঙ্গন চক্রবর্তী
শবের ভেতর শব্দ খুঁজি
আটকে আছে, বেরোয়নি
ডানায় যাপন জীবন পাখী
আকাশ চেনে, পেরোয়নি !
শোক নয়নে আজান ছিলো
আঁকতে এসে থমকে মোম,
পেরিয়ে গেলাম শব্দ মিনার
মৃত্যু যখন থমকে যম !
আয়না এসে শব্দে বসে
প্রতিবিম্বে খাজনা চায়,
যায়না ভোলা শব্দে তোলা
ফেরারী ঢেউ নদীর গায়ে !
আলো
শঙ্কর আলিঙ্গন চক্রবর্তী
হয়তো তোমার চোখেই জ্বলে আলো,
রাত্রি মাপে কান্নাচাপা সুখ
বিলীন হওয়ার আগে প্রহর জানে,
সময় চেনায় তোমায় তোমার মুখ !
হয়তো সকাল হওয়ার মতো নয়
অঙ্ক কষে চলে অবক্ষয়,
চাঁদ জেনেছে চাঁদের নকল করে
আমার ভেতর জোৎস্না জমে ভয় !
হয়তো রোদে ফুটতো তোমার বেদ
লিখতে বসি ফুলের আশায় গন্ধে,
পেতাম যদি মাটির অনুচ্ছেদ
শুন্যতাও আকাশ পেতো ছন্দে !
অনামী বন্দীশ
অনুরিমা দত্ত
জলছবি রাস্তাঘাট
মনকেমন সঙ্গী সে
হাঁটতে থাক গল্পরা
প্রেম মলাট বন্দীশে...
ডুবছে রাত ভাসছে রাত
––––––––
আয়নাদের দিনবদল,
সঙ্গী থাক একলা কাক
আসছে ভোর আসছে ভোর...
নীলচে দিন স্বপ্নহীন
––––––––
সত্যিদের খুব তাড়া,
রঙমিছিল ,আলসে চিল ,
পায়রারাও ঘরছাড়া
ফুটপাথে ঘুমরাতে
নোনতা ঠোঁট সন্মোহন
দিব্যি তোর আজ দিলাম
বৃষ্টিকোট নির্বাসন...
সময়সুতো
অনুরিমা দত্ত
––––––––
প্রতি রাতে রাস্তা কথা বলে
প্রতি রাতে অঙ্ক মেলায় চোখ
প্রতি রাতে দূরত্বরা বলে
প্রতি রাত তোমার আমার হোক...
––––––––
চোখ ঘেরা রহস্যরা জানে,
নিশিডাক হাতছানি দেয় কাকে
ঢেউয়ে ঢেউ মিশল কতক্ষণে
চাঁদেরা কখন জোয়ার ডাকে ...
––––––––
আমি শুধু কুড়িয়ে রাখি ধুলো
মহাকাল খোঁপায় গোজে কাঁটা,
পাপড়িরা সময় হলেই খসে
আমাদের হয়নি তো পথ হাঁটা
অনামি
অনুরিমা দত্ত
––––––––
সেই বিকেলের হাওয়ায় ছিল নেশা
সেই বিকেলের শিরায় ছিল মদ,
সেই বিকেলেই সাজিয়েছিলাম আমি,
তোমার আমার ছোট্ট জনপদ...
––––––––
খেলনা নগর,কিশোর যেমন সাজায়
সাধ মাখানো,চাল আর চুলোহীন,
ঢেউ এর খেলা চড়াও হলে দেহে
যেমন ঘোড়া ছোটায় বেদুইন;
––––––––
আমিও তেমন,ঠিক তেমনই টানে,
তোমার দিকে বাড়িয়েছিলাম হাত
তুমিও হেসে গালের থেকে কানে...
তোমারও তো ঘর পালানোর ধাত;
––––––––
তারপরে কি?হাওয়া যেমন বয়,
ঘরের থেকে উপড়ে আনে ঘর,
বললামই তো,হাওয়ায় ছিল নেশা
বললামই তো,নেশায় ছিল ঝড়...
––––––––
––––––––
বৃষ্টি বালক
অনুরিমা দত্ত
––––––––
ভাই বলতেই ঠোঁট ফোলাল অবুঝ বালক
সন্ধ্যা নামায় মাঠ পেরোনো ঝাপসা আলো
––––––––
লজ্জাশরীর আলগা হাসে আবছায়াতে
চোখের তারার দুষ্টুমিরা ফন্দি আঁটে
––––––––
কিন্তু ছলাৎ জল ছড়িয়েই ডুবিস জলে
ঠিক করেছি রাগ ভাঙাব রিহার্সালে
––––––––
'রাগ করেছিস' 'রাগ করেছিস' প্রশ্ন চোখে,
চোখের কোণায় কী যন্ত্রনায় দেখছি তোকে.
––––––––
সামনে আসিস হঠাৎ কেমন অকুন্ঠতায়
বুকের বাঁদিক হঠাৎ আঁধির খবর শোনায়
––––––––
চোখের পাতা পায়ের পাতায় আটকে থাকে
লালচে গালে অন্তরালে বিষাদ মাখে...
––––––––
তারপরে তুই জানাস বিদায় 'সাবধানে যাস',
রোজ এভাবেই অসাবধানের আগুন ছড়াস
––––––––
মেট্রো,অটো পেরিয়ে স্মৃতির ঘোড়সওয়ারী
আমার তো ভাই কল্পনাদের সঙ্গে ইয়ারী...
––––––––
ভাই বলেছি| রাগ দেখিয়ে বলবি ভালো
এরম থাকিস কুল ছাপান বৃষ্টি বালক...
––––––––
জীবনের অপর নাম সংগ্রাম
সমরেশ সুবোধ পড়িয়া
ছোটবেলা থেকেই লড়াই শুরু
সর্দি-কাশি, ঝড়-বৃষ্টি, শীত-গরম,
জীবনভর চলতে থাকে - নিত্যদিন
লড়াইটা, শক্ত আর কখনও নরম৷
পড়াশোনায় অন্যরা মার্কস পেলে
মায়ের বকুনি আর বাবার মার,
সবাই খায়, কেউ বেশী কেউ কম
ভেঙে যায় সুন্দর-সমৃদ্ধ কত সংসার!
চাকরি পাওয়া কিংবা ব্যবসার রেশ
সব প্রতিযোগিতায় নানান কেরামতি,
কেড়ে নিই অথবা বেশী লাভ করে নিই -
তখন কী বুঝি, কার কত হলো বেশি ক্ষতি!
সুন্দরী বৌ পাওয়া কিংবা সুন্দর স্বামী
এই লড়াইটা ভীষণ বিতিকিচ্ছিরি ব্যাপার!
যাদের প্রয়োজন এখানে তারা লড়ে কম
দুশ্চিন্তা মাথায় মা-বাবা; গাঁ-শহর করে উজাড়!
থাকার জন্য চাই আস্তানা - সবারই
বিশাল অট্টালিকা হোক বা কুঁড়েঘর,
সামনে প্রশস্ত রঙিন ফুলের বাগান নয়!
লড়াই করে বারো-বাই-দশে তোরা মর৷
বৃদ্ধবস্থায় বেঁচে থাকার শেষ লড়াই,
রোগে শোকে ভরা অথর্ব এক জীবন,
সন্তানের অবহেলা সইতে হবে শেষে,
সেটা কী লড়াই ? না! দুর্বিষহ মরণ!
অনবরত লড়াই চলছে, সব একই আইন
লড়াইয়ে থাকো মেতে শহর কিংবা গ্রাম,
যুদ্ধে হারজিৎ থাকে, এখানেও আছে, তাই
কবি বলেন; জীবনের অপর নাম সংগ্রাম!
মা তোমায় ভালোবাসি
সমরেশ সুবোধ পড়িয়া
আমি তোমায় ছাড়া
আর কাউকে চিনি না,
আমি তোমার মতো, আর
কাউকে ভালোবাসি না৷
তুমি আমার আকাশের সূর্য
তুমি চাঁদ, ধ্রুব তারা,
তুমি আমার স্বপ্ন-ভুবন,
বাঁচতে চাইনা তোমায় ছাড়া৷
তোমার আঁচল আমার আকাশ
স্নেহের পরশে আমার প্রাণ,
তোমায় না দেখতে পেলে
যেতে বসে; আমার জান৷
তোমার হাতের পিঠেপুলি
নানান ব্যঞ্জন; অমৃত সমান,
তুমি জন্ম দিয়েছো আমায়
পৃথিবীতে তাই এতো সম্মান৷
আদরে রাখতে আমায় কোলে,
তুমি জগদ্ধাত্রী, জগজ্জননী
আমি তোমায় রাখবো ভালো -
তুমি যে আমার নয়নের মনি৷
তোমার কোলে যেন স্থান পাই
সমরেশ সুবোধ পড়িয়া
নীলাকাশে মেঘের ভেলায়,
আঁচলা ভরে বৃষ্টি নিয়ে আসো,
সবুজে সবুজে সবুজময় তুমি
আমাদের কতো ভালোবাসো৷
গাছগাছালি আর নানান জীব
তোমার আঁচল সবার আশ্রয়,
খেয়ে মেখে লড়াইয়ে বাঁচি
তোমায় নেই কোনো ভয়৷
নানান সুগন্ধরসে ভরা তুমি
তোমায় পেয়ে আমরা সমৃদ্ধ,
প্রকৃতি তুমি কতো সুন্দর -
তোমায় দেখে আমরা মুগ্ধ৷
জীবন যতদিন থাকবে
তোমায় ভালোবাসবো,
হাত মুখ যতদিন চলবে
তোমায় রক্ষা করে রাখবো৷
পুনর্বার জনম হলে পৃথিবীতে
এই বঙ্গে যেন জন্ম হই,
ভুলো না মাতা, তুমি আমায়,
চিরকাল তোমারই গান গাই৷
––––––––
মাতৃ পূজা
সমরেশ সুবোধ পড়িয়া
মায়েদের পূজা করি,
মাকে আবার বাড়ি ছাড়াই,
মায়েদের আদর করি,
খেলি শুধু তাড়াই, তাড়াই!
এমন আজব কান্ড সব
নিত্যদিন করি যে আমরা,
করবো, লড়বো, জিতবো রে,
মেতে থাকি, নিয়ে এক কামরা৷
ধিন তিনাক তিন, ধিন্
তাধিন তাধিন, ধিন,
নানান ঝুট ঝামেলা রাখি,
ঘরে ঘরে দেখুন, সরেজমিন৷
ঔদ্ধত্যের সীমা লঙ্ঘন করে,
ভাবি, শক্তিকাপুর হবে কে?
সত্যিকারের পুরুষ যে জন,
ধিক্কার জানায় নিজেকে!
উদ্বাস্তু
সমরেশ সুবোধ পড়িয়া
পৃথিবীর কত মানুষ এখনও
বেঘর হয়ে দেশে বিদেশে ঘুরে বেড়ায়
খবর রাখে কে ......!
––––––––
তারাও তো বাঁচতে চায়!
তারাও তো থাকতে চায়!
তারাও তো খাদ্য চায়!
নগর সভ্যতায় খবর রাখে কে?
উদ্বাস্তুরাও এই গ্রহের বাসিন্দা৷
অন্য গ্রহের গবেষণায় খরচ করি
লক্ষকোটি টাকা ....
এদের বেলায় যত রাগ,
পকেট কি এক্কেবারে ফাঁকা৷
––––––––
খরা
সমরেশ সুবোধ পড়িয়া
বিশ্বে এখন একটা কথা
"বাঁচবো কেমন করে",
খরা এখন ধরায় দেখি -
তাই, না খেয়ে প্রাণী মরে।
অনাবৃষ্টিতে সৃষ্টি হয় না -
আমরা যে গুলো খাই,
আমাদেরই কর্ম দোষে
ভবিষ্যৎকে ডুবাই।
অনাবৃষ্টি, অনাসৃষ্টি -
মোটেও ভালো নয়,
বেশী বেশী গাছ লাগালে
দুটোই নির্মূল হয়।
সুখ সাগরে ভেসে যদি
অনন্ত সুখে বাঁচতে চাই,
প্রতি বছর পাঁচটি করে -
এসো মোরা গাছ লাগাই।
শ্রাবণের ধারা
হিরন্ময় গোস্বামী
––––––––
সারারাত ধরে
বৃষ্টি ঝমঝম
ঘুম ভাঙেনা সকালে।
বর্ষার ঘনঘটা
আকাশ ফ্যাকাশে
থৈ থৈ বৃষ্টির জলে॥
––––––––
পাখী আজ ডাকেনা
আঁধার যে কাটেনা
রোদ্দুরের দেখা নেই।
চারিদিক থৈ থৈ
নেই কোন হৈ চৈ
এই ঘনঘোর বরষায়॥
––––––––
বৃষ্টির ধ্বনি বাজে
মেঘ গর্জে ওঠে
বিজুলি চমকায় !
বাতাস বহিছে ধীরে
শান্ত মৃদু স্বরে
এমনি বরিষায়॥
––––––––
ঝিরিঝিরি ঝরঝর
ব্যাঙ ডাকে অহরহ
বসে আছি গৃহ কোণে।
মন আজি চঞ্চল
হয়েছে উৎরোল
শ্রাবণ বরিষনে॥
––––––––
––––––––
চাঁদের আলো
হিরন্ময় গোস্বামী
রাতের আকাশ ফুটেছে আলোয়
জ্যোৎস্নার বাহার ;
পূর্ণিমার চাঁদ আকাশে ছড়ায়
আলোর সমাহার ।
––––––––
ওগো চাঁদ তুমি আটকে রাখো
তোমার আদরের জ্যোৎস্নাকে ,
হারিয়ে যেতে দিওনা তাহারে
রাখিও ধরে তাকে !
––––––––
যত্ন করে বাঁধিয়া রাখিও
চিরদিন চিরকাল ,
ফুটিবে আলো ঘুচিবে আঁধার
রাত্রি হতে সকাল
রাত্রি শেষে চলিয়া যাইও
আসিও আবার কাল ;
তুমি থাকিলে অশুভ পালাবে
আসিবেনা মহাকাল ।
––––––––
––––––––
ভুলিনি আজও
হিরন্ময় গোস্বামী
সেই সব দিনের কথা
ভুলতে পারিনি আজও ;
ছেলেবেলার স্মৃতিগুলো
মনের মণিকোঠায় আজো !
পাড়ার যত ডানপিটে
ঘুরত যেথা সেথা ,
আমার বেরুনো নিষেধ ছিল
শুনতাম বাবার কথা ।
বাবার শাসন কড়া ছিল
বড্ড রাশভারী মানুষ ,
সবাই তারে করতো ভয়
মনেও ছিল সাহস !
––––––––
পাশের বাড়িতে থাকতো জ্যাঠা
সবাই করতো তারেও ভয় ;
তবু দিন কাটতো ভালো
সময়টা ছিল মনোময় ।
গরুর গাড়ির পিছন পিছন
ছুটত কত ছেলে ,
তাকিয়ে শুধু দেখতাম আমি
এটাই সবাই বলে ।
বিকেল হলে ফুটবল খেলায়
নেশা ছিল আমার ,
সে সব দিনের কথা
ভুলব কিগো আর !
আবির রাঙা
হিরন্ময় গোস্বামী
লাল আবিরে
রাঙা হলো
সম্পর্ক মিষ্টি মধুর ।
পলাশ ফুল
বন রাঙিয়ে
আনলো আজ কি সুর ॥
মন রাঙালো
রংটি দিয়ে
রবি আনলো সুর ।
দোলের দিনে
আবির খেলা
সকাল থেকে দুপুর ॥
নারী - পুরুষ
আবির নিয়ে
গান গাইতে থাকে ।
সুরের তালে
পা টি ফেলে
হাসি সবার মুখে ॥
পলাশ ফুল
খোঁপায় গুঁজে
দেখতে লাগে ভালো ।
আবির সবার
হাতে হাতে
মনকে করে আলো ॥
সুন্দরী
হিরন্ময় গোস্বামী
সুন্দরবনের 'সুন্দরী' গাছ
জগৎ জোড়া নাম ,
দেশ-বিদেশের মানুষ এসে
দিয়ে যায় দাম ।
––––––––
গরান , গেঁওয়া , 'সুন্দরী'
মূল্যবান গাছ ;
নোনা মাটির নোনা জলে
আছে নানান মাছ ।
––––––––
'সুন্দরী' গাছের জন্য
নাম সুন্দরবন ,
নামকরণটি স্বার্থক ওগো
কহে মানুষজন ।
––––––––
'রয়েল বেঙ্গল টাইগার'
এই বনেতে থাকে ,
কত পশুর বাস সেথা
সবাই জানে তাকে ।
––––––––
নদী-সাগর ঘেরা বন
সৌরভেতে ভরা ;
'সুন্দরী' গাছের শোভা
ভুলব নাকো মোরা ।